বুধবার, ০৯ Jul ২০২৫, ০২:২২ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
শহর গ্রামে বেড়েছে চোরের উপদ্রব মহেশখালীর সব্বির আহমেদ, আব্দুল জলিল ও মৌলানা ইলিয়াসের মৃত্যুতে ডক্টর হামিদুর রহমান আযাদের শোক হোয়াইট হাউসের ধন্যবাদ পেল পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ‘ভালো’ বলা পর্যবেক্ষকদের আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষণে না নেয়ার ইঙ্গিত সিইসির এসএসসির ফল প্রকাশ ১০ জুলাই দুপুর ২টায় প্রধান উপদেষ্টা ও তাসনিম জারাকে নিয়ে কটুক্তিকারী মেকানিক রেজাউল বরখাস্ত হিমছড়ি সৈকতে গোসল করতে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু কক্সবাজারে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি পালিত টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারে অর্ধশতাধিক গ্রামে জলাবদ্ধতা: দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ সময় থাকতে যত্ন নিন দাঁতের

টেকনাফে ঝুঁকিতে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা

বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার দুটি ক্যাম্পে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা চরম ঝুঁকিতে বসবাস করছে। পাহাড়ের পাদদেশে রোহিঙ্গাদের বসতঘর নির্মাণ এবং বিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ায় নিরাপত্তাঝুঁকিতে রয়েছে ক্যাম্প দুটি। ঝুঁকিতে থাকা এই ক্যাম্প দুটি হলো ২১ নম্বর চাকমারকুল ও ২২ নম্বর উনচিপ্রাং ক্যাম্প। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করা এসব রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তরের সরেজমিন পরিদর্শন প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ওয়ালী উর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। আর যত দিন না এই সব ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নিজ দেশে ফিরে যায়, তত দিন পর্যন্ত তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করাই ভালো।’

পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ক্যাম্প দুটি নিয়ে অধিদপ্তর ১৩ জানুয়ারি একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাম্প দুটির বিভিন্ন ব্লকে পাহাড় কেটে ঢালে তৈরি বসতঘরে কমপক্ষে ৬ হাজার বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক বসবাস করছে। ক্যাম্প এলাকায় ৭৫ থেকে ৯০ ডিগ্রি কোণে পাহাড় কাটায় আসছে বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধস ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ক্যাম্প দুটি বন বিভাগের ২২০ একর এলাকাজুড়ে স্থাপিত। গভীর নলকূপ, তারা পাম্প ও টিউবওয়েলের মাধ্যমে প্রতিদিন ৭ লাখ ৭৪ হাজার লিটার ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হয়। পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনের জন্য এলাকায় কোনো রকম স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও স্থাপন করা হয়নি। ফলে সার্বিক বিবেচনায় এই এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।

দুটি ক্যাম্প সম্পর্কে প্রতিবেদনের মতামতে বলা হয়, ২১ নম্বর ক্যাম্পের ৫টি ব্লকের মধ্যে ৮টি উপব্লকে ১২৩৫টি পরিবারের আনুমানিক সাড়ে ৫ হাজার রোহিঙ্গা এবং ২২ নম্বর ক্যাম্পের ৪ ব্লকের ৩টি উপব্লকে ৩২ পরিবারে বা বসতঘরে ৪৬০ থেকে ৫০০ রোহিঙ্গা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। এই দুই ক্যাম্পে ১২৬২টি পরিবারে বা বসতঘরে ৬ হাজার রোহিঙ্গা পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে।

এতে আরও বলা হয়, পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর প্রয়োজন। পরিদর্শক তাদের পর্যবেক্ষণে আরও মতামত দিয়ে বলেন, এই দুটি ক্যাম্প ছাড়া অন্যান্য ক্যাম্পেও পাহাড়ের ঢালে নির্মিত ঘরে রোহিঙ্গারা ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছে। এই দুই ক্যাম্পে প্রতিদিন ৭ লাখ ৭৪ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন এবং সেই পানি উত্তোলনে এই এলাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মতামত নিতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, গত ২১ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলায় দায়িত্বরত পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন-অর-রশিদ পাঠানের নেতৃত্বে টেকনাফের ২১ ও ২২ নম্বর ক্যাম্পটি সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। ২১ নম্বর ক্যাম্পটি উপজেলার হোয়াইকংয়ের চাকমারকুলে এবং ২২ নম্বর ক্যাম্পটি উনচিপায় হোয়াইকং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত।

নির্যাতন-নিপীড়ন, আগুনে ঘরবাড়ি পোড়ানো, গণহত্যা, নারীদের ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় আশ্রয় নেয়। রাখাইনের ২০১৭ সালের ওই নৃশংসতাকে গণহত্যা বলছে জাতিসংঘ। উখিয়া ও টেকনাফের বিপুল এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা ৩৪টি ক্যাম্পে নতুন ও পুরনো মিলে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। কিন্তু গত সাড়ে চার বছরে তাদের একজনকেও ফেরত পাঠানো যায়নি। ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর ও ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট দুবার প্রত্যাবাসনের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও নিরাপত্তা ও নাগরিকত্ব নিশ্চিত না হওয়ায় একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফেরত যায়নি। এরই মধ্যে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সে দেশে সেনা অভ্যুত্থানের পর আবারও থমকে যায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION